টিয়ার প্রকল্পের রাস্তার সিসি ঢালাই অনিয়ম

বরিশালের হিজলায় হরিনাথপুরে টিআর প্রকল্পের সিসি ঢালাই রাস্তায় দুর্নীতি ও মানহীন কাজের অভিযোগ উঠেছে।
হিজলা প্রতিনিধি
বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নে টিআর (টেস্ট রিলিফ) কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়িত সিসি ঢালাই রাস্তা নির্মাণে গুরুতর অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (PIO)। উল্লেখ্য, প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দে বাংলা মোটর সংলগ্ন পূর্ব কান্দী গ্রামের কাদের মাতবরের বাড়ি থেকে রহম আলী বেপারীর বাড়ি পর্যন্ত সিসি ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করা হয়।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও হরিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান লিটন সরকারি নীতিমতে রাস্তার দৈঘ্য, প্রস্থ কোন কিছুরই তোয়াক্কা করা হয়নি প্রকল্পটিতে ঢালাইয়ের পুরুত্ব ৪ ইঞ্চি হওয়ার কথা থাকলেও সরেজমিনে দেখা গেছে, বহু জায়গায় প্রস্থ মাত্র প্রায় ৫ থেকে ৫.৫ ফুট এবং কোথাও কোথাও ঢালাই ২/৩ ইঞ্চি পুরু।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের ইট সুরকি ও বালির সাথে প্রয়োজনীয় পরিমাণ সিমেন্ট মেশানো হয়নি, ফলে ঢালাইয়ের মান আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে গেছে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় প্রকৌশলী বা অনুমোদিত কর্মকর্তার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক হলেও ইউপি সদস্য লিটন মোল্লা নিজেই স্বীকার করেছেন, কাজটি তদারকির জন্য কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না।
তিনি দাবি করেন, “আমি হরিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এবং পিআইও অফিসের ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল ইসলামকে জানিয়েছি, কিন্তু তারা আসেননি।” প্রকল্পের ঢালাই কাজ করা হয় ৩ মে, শনিবার, যেদিন অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা ছুটিতে থাকেন।
তবে প্রশ্ন উঠেছে—এই ছুটির দিনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বেছে নিয়েছিলেন কি একসময়ের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্য লিটন ? স্থানীয়দের ধারণা, সরকারি তদারকি না থাকার সুযোগেই মানহীন কাজটি সম্পন্ন করা হয়। ইউনিয়ন সচিব মোঃ লিমন বলেন, “যদি কেউ প্রকল্প নিয়ে জানতে চায়, উপজেলা প্রকৌশল অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।”
পিআইও অফিসের ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল ইসলাম জানান, “কাজের বিষয়ে জানানো হয়েছিল, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে নিজে উপস্থিত থাকতে পারিনি।” হিজলা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অপূর্ব দাস সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে এ ধরনের অনিয়ম বারবার ঘটবে। ছুটির দিনের সুযোগে কাজ করে কর্মকর্তার অনুপস্থিতিকে পুঁজি করা হলে প্রশ্ন উঠবেই—আইনের শাসন কাজ করছে, নাকি কর্তৃত্বের ছায়ায় বেপরোয়া অনিয়ম চলছে?